স্কুলে থাকতে তোমরা নিশ্চয়ই কোণের পরিমাপ করতে শিখেছো। একটি রেখা আরেকটি রেখার উপর লম্ব হলে মধ্যবর্তী কোণ হয় , যদি একটি রেখা ঘুরে অন্যটির উল্টো দিকে চলে আসে তাহলে , আবার রেখাটি সম্পূর্ণ ঘুরে অন্যটির উপর আসলে সেটি ডিগ্রি কোণ তৈরি করে। কিন্তু কখনো ভেবেছো কি এই 'র হিসাব কোত্থেকে আসলো?
এটা বোঝার জন্য তোমাদেরকে কোণ পরিমাপের আরেকটি পদ্ধতি 'রেডিয়ান' সম্পর্কে জানতে হবে। রেডিয়ান মূলত বৃত্তের ব্যাসার্ধ্য, বৃত্তের কেন্দ্রে উৎপন্ন কোণ আর বৃত্তচাপের মধ্যে একটা সম্পর্ক তৈরি করে।
আরেকটু ভালোভাবে ব্যাখ্যা করা যাক। খাতা-কলম নিয়ে একটা বৃত্ত আঁকো। এবার বৃত্তের কেন্দ্র থেকে পরিধি পর্যন্ত ব্যাসার্ধ্য () এঁকে ফেলো। এরপর বৃত্তের পরিধি থেকে ব্যাসার্ধ্যের সমান করে বৃত্তচাপ () কেটে নাও। এই বৃত্তচাপটি বৃত্তের কেন্দ্রে যে কোণ () তৈরি করবে সেটিকে আমরা এক রেডিয়ান () বলি ।
যদি ব্যাসার্ধ্যকে দ্বিগুন করো, তাহলে বৃত্তচাপের দৈর্ঘ্যও দ্বিগুণ হবে, ব্যাসার্ধ্য তিনগুণ করলে বৃত্তচাপের দৈর্ঘ্যও তিনগুণ হবে। অর্থাৎ বৃত্তেরচাপ আর বৃত্তের ব্যাসার্ধ্য এক অন্যের সমানুপাতিক। তাহলে বৃত্তচাপ আর ব্যাসার্ধ্যের এই সম্পর্ককে গাণিতিকভাবে লিখতে পারি -
এখানে হচ্ছে সমানুপাতিক ধ্রুবক। এখন হয়তো ভাবছো রেডিয়ানের সাথে তাহলে ডিগ্রির যোগসূত্র কোথায়? তোমরা জানো যে বৃত্তের পরিধি হচ্ছে , যদি হয় [1] -
যদি সমানুপাতিক ধ্রুবকটি একক হয় অর্থাৎ হয়, তাহলে হবে।
সাধারণত বইগুলিতে সমানুপাতিক ধ্রুবকটিকে বাদ দিয়ে সহজ করে লেখা হয়। তবে সেক্ষেত্রে এর মান শুধুই রেডিয়ান এককে হিসাব করা হয়। বৃত্তের ব্যাসার্ধ সম্পূর্ণ বৃত্তটি ঘুরে আসলে সেটি কেন্দ্রে কোণ তৈরি করে। তাহলে বা ।
রেডিয়ান এককে ত্রিকোণমিতির ফাংশনের ডিফারেন্সিয়েশন আর ইন্টিগ্রেশন হিসাব করা সুবিধা বলে ক্যালকুলাসে অনেকসময় ডিগ্রির পরিবর্তে রেডিয়ান ব্যবহার করা হয়।
গাণিতিক সমস্যাঃ
১) দুইটি রেখার মধ্যবর্তী কোণ হলে ডিগ্রিতে মান কত হবে?
উত্তর দেখার আগে নিজে একটু চেষ্টা করো, প্লিজ
২) তোমাকে বলা হলো একটি কোণের মান । কিন্তু তুমি দেখলে এই কোণটিকে রেডিয়ানে পরিবর্তন করলে তোমার হিসাব করতে সুবিধা হবে। ডিগ্রি থেকে কীভাবে রেডিয়ানে রূপান্তর করবে?
উত্তর দেখার আগে নিজে একটু চেষ্টা করো, প্লিজ
[1]: Nearing, J. C. (2010). Basic Stuff. In Mathematical tools for physics. essay, Dover.